অস্ট্রেলিয়া, বিদেশ, বিমান পথে ভ্রমণ, ভ্রমণ কাহিনী

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

Travel to Australia

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

আফরোজা অদিতি

আমার পায়ের তলায় শর্ষে থাকলেও, এখন আর অতটা বেড়ানো হয়ে ওঠে না। তবে একেবারেই যে হয় না তা নয়। মাঝেমধ্যে পায়ে চাকা জুড়ে যায়। আশি আর নব্বইয়ের দশকে তো পায়ের তলায় শর্ষে আর চাকা দুটোই ছিল, খুব বেড়িয়েছি। অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

পরিবারের সঙ্গে যেমন, তেমনি নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র সংগঠনের সঙ্গে। বিদেশ আমাকে টানলেও, বিদেশে থাকতে ইচ্ছে করে না। আমার দেশ বাংলাদেশ।

আমার জন্মভূমি, আমার মমতাময়ী মায়ের আঁচল এই দেশ। মায়ের আঁচল যেমন শীতলতা আনে, তেমনি শীতলতা আনে আমার এই দেশের মাটি, জল-হাওয়া। অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

ঘুরেছি অনেক; বিদেশ বলতে কলকাতা, আসাম, দিল্লি, চেন্নাই। চেন্নাই গিয়েছিলাম, কিন্তু অসুস্থতার জন্য বিশেষ কিছু দেখা হয়নি।

আর বাংলাদেশের পাবনা তো আমার জন্মভূমি। সেখানে আছে শ্রী শ্রী অনুকুল ঠাকুরের আশ্রম, আছে কিংবদন্তী নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি।

আছে পাবনা মানসিক হাসপাতাল, আছে জোড়বাংলো মন্দির, এগুলো ছাড়াও দেখার অনেককিছু আছে।

সিলেট, কুষ্টিয়া, শাহাজাদপুর, খুলনা, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষীপুরসহ আরো নানান স্থানে গিয়েছি।

গিয়েছি হযরত শাহ্জালাল (রা.), হযরত শাহ্ পরান শাহ্ (রা.)-এর মাযার-এ; গিয়েছি লালন শাহ্, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে, হেঁটেছি, দেখেছি আর অনুভব করেছি কিন্তু লেখা হয়নি;

লেখা হয়নি নির্মলা বহতা পদ্মার কথা, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কথা, কিছুই ধরা হয়নি আজও আমার কলমে!

লেখা হয়নি কিছুই; মাঝেমধ্যে মনে হয় আমার মন ভ্রমণ কাহিনীর লেখক তো নয়ই—

এমনকি লেখকই হয়তো হতে চায়নি, কেমন করে যেন কোনদিক দিয়ে অযাচিতভাবে পেয়ে গেছি—হয়তো-বা এই অনামা-পরিচিতি।

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

এবার আসি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথায়। আকাশে উড়েছি আগেও, তবে এই প্রথম আমার ওড়ার ইতিহাস লিখছি।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে উড়েছিলাম আকাশে। উড়ে উড়ে নেমেছিলাম আরেক ভূখণ্ডে। সেই ভূখণ্ড হলো অস্ট্রেলিয়া (অ্যাডিলেইড)।

প্রত্নতাত্বিকদের মতে, প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার (কারো কারো মতে ৬৫ হাজার) বছর আগে অস্ট্রেলিয়াতে প্রথম জনবসতি স্থাপিত হয়।

১৭৮৮ সালে ক্যাপ্টেন কুক-এর নেতৃত্বে এখানে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপিত হয়।

এই উপনিবেশে বসতি স্থাপনের সময় ২৫০টি পৃথক জাতির (প্রায় ৩ লক্ষ) আদিবাসী মানুষের বাস ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার আকাশ নীল, চারদিক সমুদ্রবেষ্টিত। এখানে বাতাসে আদ্রতা কম, তাপমাত্রা বেশি থাকলেও, ঘাম হয় না।

এখানে রোদ খুব কড়া, বেশিক্ষণ শরীরের ত্বক এই রোদ সহ্য করতে পারে না। বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন গায়ে মেখে বের হতে হয়। না-হলে গায়ের ত্বক পুড়ে যেতে পারে।

অনেক সময় বেশি হাঁটলে রাস্তায় থেমেও অনেককে সানস্ক্রিন মাখতে দেখেছি। তবে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হওয়ার জন্য বৃক্ষপত্র সব সবুজ।

আর এখানে বিনা প্রয়োজনে গাছ কেউ কাটে না। বরং গাছ লাগায় এবং গাছের যত্ন করে।  

যে সময় অ্যাডিলেইড গিয়েছি আমার মেয়ে ছিল সেখানে। ওর ওখানেই যাওয়া।

অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল যাওয়ার। শেষমেশ প্লেনে উঠে বসলাম ২০ ডিসেম্বর। পরিবারের সকলে।

ছেলে, ছেলে-বউয়ের যাওয়ার কথা, ছুটি না-পাওয়াতে যেতে পারলো না ওরা।

প্লেনে ওঠার আগে পর্যন্ত বুক ঢিপঢিপ করছিল এই ভেবে যে জার্নির ধকল সহ্য করতে পারবো তো! তবে পেরেছিলাম, গেলাম আর এলামও। ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে সব কাজ সেরে প্লেনে বসলাম।

আমি অবশ্য কিছুর মধ্যে নেই, থাকি না কখনো। বড় আর মেজ মেয়ে দুজনেই করণীয় কাজগুলো গুছিয়ে নিয়েছিল। আমি শুধু সঙ্গের সাথী হয়ে চলি।

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

এই প্লেন উড়তে উড়তে নামবে সিঙ্গাপুর চ্যাঙ্গি এয়ারপোর্ট। সেখানে ৫ ঘণ্টার যাত্রা বিরতি। চ্যাঙ্গি এয়ারপোর্টে পৌঁছে ট্রেনে অন্য প্ল্যাটফর্ম-এ গেলাম। খুব সুন্দর।

পুরো এয়ারপোর্টে কার্পেট বিছানো, হাঁটার কোনো অসুবিধা হয়নি।

তা ছাড়া অনেক সুন্দর করে সাজানো। অর্কিড বাগান আছে। ফুলের সৌন্দর্যে চোখ-মন দুটোই প্রশান্তি পায়। অর্কিড বাগানে পানিতে রঙিন মাছ খেলা করছে।

যাওয়ার আগে শুনেছিলাম ওখানে প্রজাপতি গার্ডেন আছে, কিন্তু এখন নেই!

২০ ডিসেম্বর ছিল ক্রিসমাসের আগমুহূর্ত; উজ্জ্বল আলোয় সাজানো ছিল ক্রিসমাস ট্রি। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো। ক্রিসমাসের ছুটি; প্রচুর ভিড়। রাত ১১টায় আবার যাত্রা শুরু হবে। নামার সময় পরদিন সকালে অ্যাডিলেইড এয়ারপোর্ট।

প্লেন থেকে ছবি তুললাম! প্রথমে ভয় লাগছিল ছবি তুলতে পরে অবশ্য সামলে নিয়েছিলাম। ওখানে নামার পরে চেকিং শেষে বের হয়ে দেখি দাঁড়িয়ে আছে মেয়ে।

ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে ‘উবারে’ না-গিয়ে একটি ‘ট্যাক্সি’ নিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বের হলাম সকলে।

এয়ারপোর্টেই ট্যাক্সির ব্যবস্থা ছিল। রাস্তার দুইপাশের দৃশ্য দেখার মতো। সবুজ পত্রসম্ভারে সজ্জিত বৃক্ষ। আর আছে পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে সবুজের সমারোহ, চোখ জুড়িয়ে যায়।

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

দীর্ঘ আকাশ-পথ ভ্রমণে ‘জেটল্যাগ’-এ আক্রান্ত হতে পারে এ-জন্য পরদিন ঘুমিয়ে কাটানো স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু খুব কম সময় নিয়ে যাওয়ার জন্য না-ঘুমিয়ে বেড়াতে বের হলাম।

অ্যাডেলেইড খুব শান্ত স্থান। তাস-মোর-এ যেখানে উঠেছিলাম সেখানে একই বাউন্ডারির মধ্যে ৭টি বাসা। বাসার সামনে ঘাস জমি, ফুলের গাছ।

পানি বা জল দেয় কোনো প্রবীণ মানুষ, তাঁদের বলতে হয় না। নিজে থেকেই দেয়।

শুধু নিজের অংশের ঘাস বা ফুলগাছ নয়, ঐ বাউন্ডারির সব ঘাস-গাছে পানি দিচ্ছেন তিনি; রাস্তার ধারের গাছগুলোতে গাড়ি এসে পানি দিয়ে যায়।

আর ওখানকার বাচ্চারাও নিজেদের কাজ নিজেরা করে। বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে না।

ছোট শিশুদের কারো হাতে মোবাইল দেখতে পেলাম না, ওদের কারো হাতে বই, কারো হাতে খেলার সরঞ্জাম কিংবা ছবির আঁকার জিনিসপত্র!

ওরা খেলাধূলা করে, আঁকাআকি করে; বই পড়ে বড় হয়ে উঠছে। আরো একটি বিষয় ওখানে ছোটো ছেলে-মেয়েরা বড়দের দেখলেই হাই/হ্যালো, কুশল জিজ্ঞেস করে।

অ্যাডিলেইডে ছিলাম তিন সপ্তাহ। এতো কম সময়ে খুব বেশি একটা দেখা বা বুঝা যায় না। বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়ালাম।

সমুদ্র দেখতে গেলাম, অ্যাডেলেইডে দুটি সমুদ্র সৈকতে গিয়েছি, হেনেলি (henely) বিচ আর গ্রেনেলগ (glenelg) বিচ। খুব সুন্দর চোখ জুড়িয়ে যায়।

ওখানকার সমুদ্র সৈকতে ইচ্ছা করলে চাদর বিছিয়ে পাড়ে বসে সাগর দেখা যায়, আবার নিচে নেমে বালিতে বসেও সাগর স্পর্শ করা যায়।

বসার জন্য ঘাসের আস্তরণ করা স্থান আছে, আছে কাঠের বেঞ্চ, সিমেন্ট বাঁধানো বসার জায়গাও আছে; যেখানে ইচ্ছা বসা যায়।

শিশুদের জন্য খেলার জায়গা আছে। দোলনা আছে। আর আছে মাটির তলের অনেকগুলো ঝরনা। ঐ স্থানও শান-বাঁধানো, শিশুরা ওখানে মনের আনন্দে পা ভিজায়, গা ভিজিয়ে খেলে। মাঝেমধ্যে ওদের বাবা-মা খেলে ওদের সঙ্গে।

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

একটা বিষয় খুব ভালো লাগলো, ওখানে বাচ্চার দেখভাল মায়ের সঙ্গে বাবাও করছে। ছোটশিশু যে হাঁটতে পারে না—তাকে বাবাই বহন করছে, শিশুদের মা যে দেখভাল করে না বা বহন করে না তা নয়!

একটি বাচ্চা তো দুজনেরই, তাই দেখভাল করার দায়িত্ব উভয়ের, এটা দেখেই ভালো লেগেছে। শিশুরা, নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠছে এখানে।

সমুদ্র-আকাশ-পাখি সব সময়েই ভালো লাগে আমার। আমরা সমুদ্রের নেমে পানিতে পা ভিজিয়ে বালিতে হেঁটে ঝিনুক কুড়িয়ে মন ভরে নিলাম খুশি আনন্দে।

সমুদ্র-সৈকতের আর একটি দিক ভালো লেগেছে, সেটি হলো : মাঝ সমুদ্রে যাওয়ার জন্য জেটি-ব্রিজ। সেখানে গিয়ে সাগরের চমৎকারিত্ব আরো ভালো দেখা যায়!

ওখানে প্রায় সময়ই বক্তৃতা দেয় কেউ; আমরা যেদিন গ্রেনেলগ বিচে গিয়েছিলাম, সেদিনও বক্তৃতা করছিলেন কেউ, সকলে শুনছিলেন।

সব সৈকতেই খাবার দোকানসহ নানাবিধ সরঞ্জামের দোকান থাকে, এখানেও তার ব্যতিক্রম নেই। এই বিচ দুটো প্রশান্ত মহাসাগরের বিচ।

এখানে গাঙচিলগুলো ভয় পায় না মানুষকে। মানুষের আশেপাশে পরম নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়, মানুষের কাছাকছি থাকাটাই যেন পছন্দ ওদের।

ওদের খাবার দিলে ওরা খায়, কিন্তু একবার খাবার দিয়ে যদি পরে আর না-দেওয়া হয়, তবে কখনো কখনো খাবার ছিনিয়ে নিতে পারে।

হাতের মোবাইল সাবধানে রাখতে হয়, না-হলে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে গাঙচিল!

ওখানকার বিচগুলোতে খাবার দোকান তো আছেই, আবার বালি বা সমুদ্র ছুঁইয়ে উঠে যাওয়া সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই পাওয়া যাবে পানি বা জলের কল। খাওয়ার এবং হাত-পা ধোওয়ার জন্য এই জলের ব্যবস্থা।

ওখানে আছে ময়লা ফেলার বীন। ওখান থেকে কাগজ-বোতল পৃথক করে গুছিয়ে নিয়ে যায়, ওদের ভিন্ন ভিন্ন রঙের পোশাক দেখলেই চিহ্নিত করা যায়।

রাস্তার পাশে আর সুপার-মলগুলোতেও এই রকম বীন থেকে কাগজ, বোতল কুড়ায় কেউ কেউ।

তবে ওখানকার পাখি আর দরিদ্র মানুষ যাই বলা যাক না কেন, কেউ কখনো কারো কাছে খাবার চায় না। এমনকি গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ভিক্ষাও চায় না। আমার চোখে পড়েনি।      

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

একদিন গেলাম ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়া। এটি পাবলিক ইউনিভার্সিটি। পড়া শেষে ওখানেই চাকরি করে মেয়ে। ইউনিভার্সিটি দেখতে গেলাম।

সব ক্যাম্পাস ঘোরা সম্ভব হয়নি, শুধু ওর ক্যাম্পাসেই যেটুকু ঘুরেছি চোখ জুড়িয়ে গেছে।

ওই ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলাম বাসে। অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য, বাসের অভিজ্ঞতাও চমৎকার। স্টপেজে গিয়ে দাঁড়িয়ে শুধু খেয়াল রাখতে হবে কতো নম্বর বাসে উঠতে হবে।

কারণ সব নম্বরের বাস সব স্টপেজে যাবে না বা থামবে না। বাস স্টপেজে এসে দাঁড়ায়, দরজা খোলে। যাদের নামার  তারা নেমে যাওয়ার পর যাদের ওঠার তারা ওঠে।

তার পর  কার্ড মেশিনে ছুঁইয়ে দিয়ে সিগন্যাল পেলে সিটে বসতে হয়। প্রতি মাসের কার্ড করে নেয় কেউ কেউ। কেউ বা টিকিট কেটে ওঠে। দুই রকম সিস্টেমই আছে।

বাস-ট্রেনে একই ব্যবস্থা। ওখানে প্রবীণ, শিশু, গর্ভবতী নারী, ডিজঅ্যাবল নারী, পুরুষ, শিশুদের জন্য খুব সুন্দর ব্যবস্থা; বাসের ব্যবস্থা ছাড়াও যাত্রীদের মধ্যে তরুণ-তরুণীরা খুব সাহায্য করে তাঁদের। তাঁদের জন্য নির্ধরিত স্থানে কেউ বসে না।

বাসও কখনো চলন্ত অবস্থায় যাত্রী নামায় না। আবার কোনো স্টপেজে যদি নির্ধারিত সময়ের আগে পৌঁছে যায়, তাহলে গাড়ি-চালক যাত্রীদের কাছে সে-কথা বলে ওখানে অপেক্ষা করে।

কোনো যাত্রীরও তাতে আপত্তি থাকে না, যদি কারো তাড়া থাকে বা যেখানে নামবে তার কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তাহলে ইচ্ছা করলে নেমে যেতে পারে, আবার বসেও থাকতে পারে!

যাই হোক বাস থেকে নামলাম ‘রানডাল মলে’—এটি একটি শপিংমল। শপিং করার জন্য যাইনি, গিয়েছিলাম জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে!

ওখানে ঘুরে দেখে তার পর ইউনিভার্সিটি। রিকশা নেই—পায়ে হাঁটতে হয়। তবে বাস ছাড়া আছে ‘উবার’, ‘ট্যাক্সি’, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি’র ব্যবহারই এখানে বেশি।

কিন্তু কোনো জায়গা ভালো দেখতে-জানতে হলে পায়ে হেঁটে কিংবা বাসে-ট্রামে যাওয়া ভালো। তাই বাস, ‘উবার’ আর ‘ট্যাক্সিতে’ই বেড়িয়েছি বেশি।

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

ইউনিভার্সিটি দেখে মেয়ের কাজ শেষ হলে আবার হেঁটে ‘রানডাল মল’-এ এলাম। আসার পথে দেখলাম একজন গান গাইছে।

পরিষ্কার ইস্ত্রি করা জামাকাপড় পরনে; গান গাইছে। হাত পেতে ভিক্ষা করছে না—গান গেয়ে উপার্জন করছে।

‘রানডাল মল’-এর ভেতরের রাস্তায় একজন কসরত দেখাচ্ছে টাকার বিনিময়ে, গোল হয়ে দেখছে সকলে; আমাদের গ্রামে-গঞ্জে আগে যেমন দেখেছি। ‘রানডাল মল’-এ গিয়েছিলাম ক্রিসমাসের আগের দিন।

ক্রিসমাসের ছুটিতে সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠান হয়। ওখানে সেদিন স্টেজ করে গানের অনুষ্ঠান হয়েছিল। মল-এর ফুটপাত মানুষ হাঁটছে, কেউ আবার বসছে! রাস্তার ওপরে কাঠের বেঞ্চ রাখা আছে। ঐ বেঞ্চের ওপর বসছে কেউ কেউ। 

গাছ আছে, শালিক, কবুতর, চড়ুই আর কাক উড়ছে, বসছে, খাবার খুঁটছে। ওখানকার কাকগুলো দেখতে অন্যরকম, সাদা-কালোর মিশেল! কাকের কা-কা ডাকটিও ভিন্নতর!

(চলবে)

…………………

পড়ুন

আফরোজা অদিতির পাঁচটি কবিতা

গোকুল মেধ বা বেহুলার বাসরঘর

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা – ২য় পর্ব

Spread the love

১৭ thoughts on “অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকথা

Leave a Reply

Your email address will not be published.